চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা: পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ১২ আসামির রিমান্ড মঞ্জুর

 


চট্টগ্রামে আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী হত্যা ও পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ১২ আসামিকে ৬ দিন করে রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার এই আদেশ দেন।

ঘটনার পটভূমি

গত ২৬ নভেম্বর বিকেলে চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার পর তাঁর অনুসারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এই সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় নিহত সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পাশাপাশি পুলিশের ওপর হামলা, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও চারটি মামলা হয়।

গ্রেফতার ও রিমান্ড

আইনজীবী হত্যাকাণ্ডসহ পাঁচটি মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনকে আজ ছয় দিনের রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আসামিরা হলেন জয় নাথ, রুমিত দাস, নয়ন দাস, গগন দাস, সুমিত দাস, আমান দাস, বিশাল দাস, সনু মেথর, সুমন দাস, রাজেশ দাস, দুর্লভ দাস ও অজয় সূত্রধর চৌধুরী।

কড়া নিরাপত্তায় আসামি হাজিরা

সকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আসামিদের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর শুনানি শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি থানার দুটি মামলায় ৭ দিন রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। আদালত ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে, ২ ডিসেম্বর পুলিশের ওপর হামলার আরেক মামলায় আট আসামির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

ভিডিও ফুটেজে পরিচয় শনাক্ত

পুলিশের সংগ্রহ করা ৫২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে আইনজীবী সাইফুল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাইফুলকে আঘাত করেন ওম দাশ, চন্দন ও রণব। আরও ২৫-৩০ জন তাকে পেটাতে থাকেন, যাঁদের বেশিরভাগ পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলে জানা গেছে।

পূর্ববর্তী সহিংসতার প্রেক্ষাপট

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার পর সংঘর্ষ শুরু হয়। আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তিনটি মামলায় ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং প্রায় ১,৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও পরবর্তী পদক্ষেপ

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজুর রহমান জানিয়েছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আইনজীবী হত্যার ঘটনায় ৯ জনকে সরাসরি অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এই ঘটনায় আরও গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদ হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Comments

Popular posts from this blog

এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতের পতাকা পায়ে মাড়ানোর ভাইরাল ছবি ভুয়া: রিউমার স্ক্যানার

রাজনীতির মাঠ থেকে বেডরুম: অবাধ যাতায়াত ছিল অভিনেত্রীদের

ভারতীয় পতাকা ‘প্রণাম করে’ চিকিৎসা নিতে হবে বাংলাদেশিদের!l