দিল্লি অভিমুখে কৃষকদের ব্যাপক বিক্ষোভ, হরিয়ানায় ইন্টারনেট বন্ধ

 


ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকেরা ফসলের ন্যায্য মূল্যের দাবিতে "দিল্লি চলো" স্লোগান দিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু করেছে। দলে দলে কৃষকরা যোগ দিচ্ছেন এই বিক্ষোভে। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণের আইনি নিশ্চয়তা, কৃষি ঋণ মওকুফ এবং কৃষকদের জন্য পেনশন সুবিধা।  


শুক্রবার দুপুরে কিষাণ মোর্চার ডাকে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার শম্ভু বর্ডার থেকে এই পদযাত্রা শুরু হয়। এর পরই হরিয়ানার আম্বালা জেলাতে সকল ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। সেখানে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল এবং ১১টি গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবা।  


কৃষকদের দাবি ও আন্দোলনের উদ্দেশ্য**

কৃষকরা বলছেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবি আদায়ে আন্দোলন করছেন এবং সরকার আলোচনার মাধ্যমে তাদের দাবি পূরণ করুক। কৃষক নেতা গণমাধ্যমকে বলেন, "নিরাপত্তা বেষ্টনী না ভেঙে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চাই। আমরা আশা করি, সরকার আমাদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করবে। আলোচনার দরজা আমাদের পক্ষ থেকে সবসময় খোলা।"  


নিরাপত্তা জোরদার, সরকারের ভূমিকা ও সমালোচনা**


দিল্লি ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে মোদি প্রশাসন। শম্ভু বর্ডারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কংগ্রেসের সংসদ সদস্য দিপেন্দার সিং হুদা কৃষকদের এই অবস্থার জন্য বিজেপি সরকারকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, "সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি। তাদের দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত ছিল।"  


কৃষি আইন ও পূর্ববর্তী প্রতিশ্রুতির ব্যর্থতা**

এই বিক্ষোভের পেছনে রয়েছে কৃষি আইন বাতিল ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণের দাবি, যা আগেও বড় ধরনের কৃষক আন্দোলনের জন্ম দিয়েছিল। ২০২১ সালে মোদি সরকার কৃষি আইন বাতিল করলেও কৃষকদের ন্যায্য দাবিগুলো পূরণে তেমন অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।  


ইন্টারনেট বন্ধ ও জনজীবনের অস্থিরতা**  

হরিয়ানার বিভিন্ন গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া এবং স্কুলগুলো বন্ধ রাখার ঘটনায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে বিভিন্ন এলাকায় প্রশাসন সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।  


সামগ্রিক প্রভাব**

এই আন্দোলন শুধু দিল্লির রাজনৈতিক পরিবেশ নয়, ভারতের অর্থনীতি এবং কৃষি ব্যবস্থার ওপরও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কৃষকদের দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন আরও জোরালো হতে পারে।  

সারসংক্ষেপে, কৃষকদের এই বিক্ষোভ ভারতের কৃষি ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। সরকার ও কৃষকদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান আসবে কিনা, সেটিই এখন দেখার বিষয়।**

Comments

Popular posts from this blog

এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতের পতাকা পায়ে মাড়ানোর ভাইরাল ছবি ভুয়া: রিউমার স্ক্যানার

রাজনীতির মাঠ থেকে বেডরুম: অবাধ যাতায়াত ছিল অভিনেত্রীদের

ভারতীয় পতাকা ‘প্রণাম করে’ চিকিৎসা নিতে হবে বাংলাদেশিদের!l